ওয়েব ডেস্ক: বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বলেছেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ শেষ হওয়ার পর দেশ স্পষ্ট দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে। একপক্ষ নির্বাচনের পক্ষে, অন্য পক্ষ অস্বচ্ছ নির্বাচনের বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে বিরোধীপক্ষের পাল্লা ভারী হয়ে যাবে। বিশ্বের গণতন্ত্রকামী সব দেশ এবং জাতিসংঘ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাগো নিউজকে তিনি এসব কথা বলেন।
টিপু বলেন, দু-একটি দেশ এ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার পক্ষে কথা বললেও তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রে তেমন কোনো প্রভাব রাখে না। আবার সরকারি শিবিরের মনোনয়ন পাওয়ার আশায় বিএনপিসহ বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের নির্যাতন প্রশাসনকে ব্যবহার করে হয়রানি করার চেষ্টায় সব পক্ষ আছে। কিন্তু যখন মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত হয়ে যাবে তখন যে পক্ষ মনোনয়ন পাবে না তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। আবার যে পাবে, সে নির্বাচনী তরী পার করার জন্য বিএনপিসহ অন্য দলের সমর্থকদের ভোট পাওয়ার আশায় অনেক ক্ষেত্রে কৌশলী হবে। সে সুযোগটাই আন্দোলনকারীদের ব্যবহার করতে হবে। এখন যেহেতু শাসক গোষ্ঠী দল এবং বিরোধী জোটকে ভাঙার চেষ্টায় আছে, সে ক্ষেত্রে বিরোধী জোট নিজেদের কর্মীদের প্রতি কঠোর না হওয়ার কৌশল অবলম্বন করতে হচ্ছে। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ শেষ হওয়ার পর নিজেদের দলের নেতাকর্মীরা, যারা ফাঁকি দিচ্ছে, তাদের মাঠে থাকার কঠোরতা অবলম্বন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে আন্দোলনের নতুন মোড় সৃষ্টি হবে। সরকার পক্ষ আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বে। তখন সরকারের কোনো কূটকৌশলই কাজে আসবে না।
তিনি বলেন, যেমনটা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় অসম্ভব এক সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়া অভি-নিরুকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে নিয়েছিলেন। ফলে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত স্বৈরাচার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। তাই বিরোধীমতের নেতাকর্মীদের পরিস্থিতি মোকাবিলা করে সামনের দিকে অগ্রসর হলে যেকোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ফলে গণতন্ত্রকামীদের বিজয় নিশ্চিত হবে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে নিয়ে বিএনপির নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্রকামী অধিকাংশ রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণ গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে। অন্যদিকে সরকার পক্ষ রাষ্ট্রের কোষাগরের অর্থ ব্যয় করে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যবহার করে বিরোধীমতের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, গ্রেফতার, পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন, গ্রেফতার, ফরমায়েশি সাজাসহ সব ধরনের নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিরোধী দলকে ভেঙে তথাকথিত নিজেদের পছন্দের নির্বাচনে আনার জন্য সব ধরনের কূটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট থেকে দু-একজন খড়কুটো সরকার ভাগিয়ে নিতে পারলেও দেশের মানুষ যাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব মনে করে, তারা সবাই একটি প্ল্যাটফর্মে এখন অবস্থান করছে।
টিপু বলেন, দেশে রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সব শ্রেণিপেশার মানুষ মানসিকভাবে সরকারের নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রক্রিয়াকে প্রকাশ্যে নীরবে সমর্থন না করে সমালোচনা করছে। সরকারি বাহিনী যাদের গ্রেফতার, হত্যা, নির্যাতন, বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, রিমান্ডের নামে নির্যাতন অমানবিকভাবে করছে। পিঠমোড়া দিয়ে হ্যান্ডকাপ দেওয়া, তথাকথিত সাজা- সবকিছুই গণতন্ত্রের স্বার্থে সব শ্রেণিপেশার মানুষরা হাসিমুখে বরণ করে নিচ্ছে। কারো ভেতরেই হতাশার ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।